Banglar Toholgan by Radhamadhab Mondal
₹281
“ভজগৌরাঙ্গ কহগৌরাঙ্গ, লহগৌরাঙ্গের নামরে/
যে জনা কৃষ্ণভজে সে হয় আমার প্রাণরে..”
খুব প্রাচীন রীতিনীতির এই সাধনসংগীত ‘টহল’! তাঁদের একটি নিজস্ব মাটির সংস্কৃতিও রয়েছে, সম্পূর্ণ লৌকিক ঘরানায় গাথা! অসম্ভব সুন্দর কথা, সাধনার কথা, দেহাতি মাটির ভিতর তাঁদের অনুভবি চলন! উপলব্ধি করা শক্ত! বৈষ্ণবসাধকরা করেন, নিজস্ব যাপনে। সে যুগের অবসান ঘটেছে অন্ধকারের ভেতরে, সামাজিক মনের দূরত্বের বন্দী রং করা ঘরে আটকে থেকে, এখন মায়াভরা মানুষের সময়হারানো খেলা। ছন্দ নেই, শাসন নেই, সাধনা নেই।
মূলত গৃহী বৈষ্ণব সাধক সমাজের পাশাপাশি, আখড়াধারী বৈষ্ণব বাবাজিরাও করতেন সে যুগে টহলের গান, প্রতি পহরে। আজ সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেই রীতিনীতিরও ঘটেছে বদল। ভাব ও ভাবনার নির্জন জগৎকে ছুঁয়ে ফেলেছে সাধনার আধুনিক রসায়ন। শারীরবৃত্তের নানা রকম সংস্কৃতিতে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে টহলের আপন মহলের কাছারি ঘরে, আধুনিক রসায়নের দেহবিদ্যার রহস্য। সম্যক পরিচয় না দিয়েই, সেই রহস্য রসায়নকে আত্মস্থ করার নেশায় ছুটছে সাধক কূল। কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বৈষ্ণব বৈরাগী, টহল গানের চর্চা নিয়ে! তাঁর খোঁজেই হেঁটেছি সবাই, দীর্ঘ পথের পথিক হতে। সময়ের বসে নয়, এমন কথার বসে আটকে থাকা মানুষরাই সাধক। আর সেই মানুষের মনের আনন্দেই বৈষ্ণব জীবনের পরম্পরায় প্রবাহিত হচ্ছে ধীরে ধীরে টহলের সুপ্ততাপ। তাঁদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানাবিধ পথ। যৌনাচার জঘন্য অপরাধ হিসেবে পরিচিত হলেও, তা আজও বৈষ্ণব সাধক সমাজের মানুষদের কাছে বেশ সহজলভ্য। তাঁরা সই পাতিয়ে গামছা পাতে মাটিতে! খুট আঁচল ছায়া পেতেও কেউ কেউ মাটির গন্ধ নেয় অনুভবে। সাজানো বাগানে চাঁদোয়ার নীচেই তাঁদের রাত নামে! মায়ারাজ্য।
বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে বৈষ্ণব সাধকদের সমাজে নানা নিয়ম নীতি চালু রয়েছে। দীর্ঘ গবেষণার ফল “বাংলার টহল গান”। বাংলায় এযাবৎ লেখা হয়নি এমন বিষয়ের উপর বই। এপ্রজন্মের তরুণ লেখক রাধামাধব মণ্ডল, তাঁর ক্ষেত্রানুসন্ধানী গবেষণাধর্মী লেখায় প্রথম লিখেছেনঃ “বাংলার টহল গান”।
বইয়ের পাতায় পাতায় রহস্যঘন সাধক জীবনের ইতিউতি। রয়েছে আখড়া, আখড়াধারী জীবনের কথা, বাংলার অজস্র টহলগান এবং সাধকগায়কদের সাধনসঙ্গের স্মৃতিমন্থন। অপ্রকাশিত গান, পাণ্ডুলিপি এবং রাজ্যের টহল শিল্পীদের তালিকা, বংশলতিকা।
Reviews
There are no reviews yet.